মেগানিউজ রিপোর্টঃ
সিনেমার বাইরে বিয়ে-সন্তান ও ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে আলোচনার শীর্ষে শবনম বুবলী। একের পর এক নতুন নতুন গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে তাঁকে ঘিরে।
সর্বশেষ শোনা গেল শাকিব খানের সঙ্গে নাকি বেশ কিছুদিন আগেই বিচ্ছেদ হয়ে গেছে তাঁর। বারবার মিডিয়াকে এড়িয়ে গেলেও এসব প্রসঙ্গ ও নানা বিষয় নিয়ে মুখ খুলেছেন বুবলী।
বর্তমান ব্যস্ততা কী নিয়ে?
এখন বিএফডিসি প্রযোজিত সরকারি অনুদানের ‘চাদর’ সিনেমার শুটিং করছি ঢাকায়। জাকির হোসেন রাজু স্যার খুব সুন্দরভাবে গুছিয়ে কাজ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। আশা করছি, দর্শক চমৎকার গল্পের একটি সিনেমা দেখতে পাবেন। এ ছাড়া সহঅভিনেতা সাইমনও বেশ কো-অপারেটিভ। আশা করি, দর্শকরা আমাদের রসায়ন ভালোই উপভোগ করবে।
ব্যক্তিগত জীবনের আলোচিত বিষয়টি কাজের জায়গায় কি কোনো প্রভাব ফেলছে?
বিষয়টি (শাকিব খানের সঙ্গে বিয়ের ঘটনা ও সন্তানের খবর) একদমই ব্যক্তিগত এবং পারিবারিক। তাই আমার কাজের জায়গায় এর কোনো প্রভাবই পড়ছে না। আমি পূর্বনির্ধারিত শিডিউল অনুযায়ী সব শুটিং করে যাচ্ছি, কাজ করে যাচ্ছি। আর কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত সবাই খুব সহযোগিতা করছেন। সবচেয়ে বড় কথা, আমি যখন শুটিংয়ে থাকি ফোকাসেও থাকে সেটা। সুতরাং ফোকাস থেকে বিচ্যুত হওয়ার কোনো সুযোগ নাই।
ব্যক্তি বুবলীর সঙ্গে প্রফেশনাল বুবলীর সমন্বয় করেন কীভাবে?
আমি বরাবরই ব্যক্তি বুবলী এবং চিত্রনায়িকা বুবলীকে আলাদা রাখি। আপনারা খেয়াল করে দেখবেন আমি কখনই ব্যক্তি বুবলীকে নিয়ে কথা বলি না। কারণ দর্শক পর্দায় ব্যক্তি বুবলীকে নয়, আমার প্রফেশনাল কাজটি দেখছেন। তাই কাজের ক্ষেত্রে প্রফেশনাল থাকাটা, মনোযোগী হওয়া জরুরি। হয়তো দর্শকের আগ্রহের কারণে ব্যক্তি বুবলীর কিছু বিষয় সামনে আনতে হয় বা কথা বলতে হয়। কিন্তু সবারই একদম পারসোনাল লাইফ বলে তো কিছু আছে। সেটা ব্যালান্স করাটাও গুরুত্বপূর্ণ। তাছাড়া যাঁরা আমার সঙ্গে শুটিং করেছেন তাঁরা জানেন আমি যখন প্রফেশনাল কাজ করছি তখন একশত ভাগ ডেডিকেশন দিয়ে সিরিয়াসলি কাজ করি। আবার প্রফেশনাল কাজ শেষ করেই বাসায় চলে আসি, যেখানে আমি শুধুই ব্যক্তি বুবলী। এভাবে ব্যক্তিগত বিষয় এবং প্রফেশনাল বিষয় সমন্বয় করতে চেষ্টা করি।
শেহজাদ খান বীর কেমন আছে?
আলহামদুলিল্লাহ, খুব ভালো আছে। সবাই যেভাবে অনেক অনেক ভালোবাসা এবং দোয়া দিচ্ছেন বাবুকে, আমি সত্যিই সবার প্রতি খুব কৃতজ্ঞ।
কাজের ব্যস্ততায় বীরের জন্য সময় বের করেন কীভাবে?
বীরের জন্য তো আমার প্রচুর সময়। শুটিংয়ের সময়টুকু বাদে ওর সঙ্গে আমি পুরো সময়টাই দেই। ওকে নিয়ে প্লে-গ্রাউন্ডে যাওয়া, নানা জায়গায় ঘুরতে যাওয়া, ওর সঙ্গে ওর মতো বেবি হয়ে পিকাবু খেলা, রান্না করা, গান শোনানো, গল্প করা, ড্যান্স করা, দুষ্টামি করা থেকে শুরু করে অনেক মজা করি আমরা। আমি বরাবরই চাই ওকে পর্যাপ্ত সময় দিতে। মা হিসেবে যতটুকু দেওয়ার ততটুকু দিচ্ছি ওকে। এখানে আমি আপসহীন। অন্যদিকে, চলচ্চিত্রের প্রতিও অবশ্যই আমার দায়বদ্ধতা আছে। কারণ চলচ্চিত্রই আমাকে বুবলী বানিয়েছে। তাই ভালো গল্প ও নির্মাতা দেখে বেছে বেছে কিছু ভালো কাজের সঙ্গে নিজেকে যুক্ত করছি। তাই এভাবেই সবকিছুর সমন্বয় করছি। আপনাদের দোয়ায় এ সবকিছুই ভালোভাবে সমন্বয় করতে পারছি।
বিয়ের পর হানিমুনে গিয়েছিলেন কোথায়?
আসলে বিয়ের সময় এবং বিয়ের পরও কিন্তু আমাদের টানা শুটিং চলছিল। তাই শুটিংয়ের জন্য দেশ-বিদেশের অনেক জায়গায় যাওয়া হলেও আলাদা করে হানিমুনের সময়টা আমাদের ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও বের করাটা সম্ভব হচ্ছিল না। কারণ বিয়ের পর হানিমুনের থেকেও আমাদের শুটিংয়ের কমিটমেন্টগুলো গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এ জন্য লাস্ট টাইম (গত বছর) আমেরিকায়ই হানিমুনের ঘোরাঘুরিটা হয়েছে। তাই বলতে পারেন বিয়ের পর আমাদের হানিমুন আমেরিকায় হয়েছে।
বাবা হিসেবে কতটুকু দায়িত্ববান শাকিব খান?
শাকিব খান আসলে বাবা হিসেবে সন্তানকে নিয়ে এবং সন্তানের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে অনেক সুন্দর পরিকল্পনা করেন। সবসময় পাশে থাকার চেষ্টা করেন। কিন্তু তিনি নিজেও তো অনেক ব্যস্ত, নানা ব্যস্ততায় সবসময় সব পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হয়তো একটু সময় লেগে যায়। তাছাড়া সবকিছু নিয়ে ওকে বেশি প্রেশার দিতে চাই না আমি। তাই যে কোনো দায়িত্ব বাস্তবায়নের ব্যাপারটি আমিই মূলত দেখাশোনা করি। এ জন্য এই ব্যাপারটিও পরিবারে চেক অ্যান্ড ব্যালান্স করে নিয়েছি। সেক্ষেত্রে একজন পরিকল্পনাকারী, আরেকজন বাস্তবায়নকারী। এভাবেই চলছে।
গুঞ্জন উঠেছে, আট মাস আগে আপনার ও শাকিবের বিচ্ছেদ হয়েছে- সত্যতা কতটুকু?
এ ধরনের গুজবের খবর খুবই উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে করা হচ্ছে, যার কোনো ভিত্তি নেই। দেখুন, আমাদের মধ্যে বিচ্ছেদ হলে এখন কেন আমরা আমাদের বিয়ে আর সন্তানের বিষয়টি সামনে আনব? তাহলে তো আট মাস আগেই আনতাম। আসলে কে বা কারা এ ধরনের ভিত্তিহীন গুজব ছড়াচ্ছেন তা বোধোগম্য নয়। আমাদের সন্তানের বিষয়টি সামনে আনার পর থেকে নানা ভিত্তিহীন গুজব অনেকে সামনে এনে ব্যক্তিগত আক্রমণ করতে চাইছেন যা আসলে ঠিক নয়। আমরা বিয়ে করেছি, সন্তান পৃথিবীতে এসেছে সুন্দর একটি পরিবারের জন্য। সুন্দরভাবে সংসার করার জন্য, বিচ্ছেদের জন্য নয়। কাজেই এ ধরনের খবরের কোনো ভিত্তি নেই।