মেগানিউজ রিপোর্টঃ তিন বন্ধু একসঙ্গে চলত, একসঙ্গে পড়ত। একসঙ্গেই চেপে বসে ছিল মোটরসাইকেলে।
স্কুলে যাচ্ছিল পরীক্ষা দিতে। কিন্তু স্কুলে পৌঁছানো হয়নি তাদের। পথিমধ্যে ইঞ্জিনচালিত করিমনের ধাক্কায় গুরুতর আহত হয় তিন বন্ধু। ঈশ্বরদী উপজেলার বহরপুর এলাকায় পাবনা-ঈশ্বরদী সড়কে গত সোমবার সকালে এ দুর্ঘটনা ঘটে। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হলে একে একে তিন বন্ধুরই মৃত্যু হয়। সবশেষ জন মারা যায় গতকাল বুধবার দিবাগত রাত দুইটায়।
নিহত তিন বন্ধু হলো উপজেলার দাশুড়িয়া ইউনিয়নের আখাইল শিমুল গ্রামের ইসমাইল হোসেনের ছেলে মিতুল হোসেন (১৫), নওদাপাড়া গ্রামের শিহাব সরদারের সিয়াম সরদার (১৫) ও খয়েরবাড়ি গ্রামের বাচ্চু হোসেনের ছেলে বিশাল হোসেন (১৫)। তারা ঈশ্বরদী সরকারি ভোকেশনাল টেক্সটাইল ইনস্টিটিউটে দশম শ্রেণির ছাত্র ছিল।
স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সোমবার সকাল ১০টা থেকে ঈশ্বরদী সরকারি ভোকেশনাল টেক্সটাইল ইনস্টিটিউটে দশম শ্রেণির নির্বাচনী পরীক্ষা ছিল। পরীক্ষায় অংশ নিতে তিন বন্ধু বাড়ি থেকে বের হয়। এরপর মোটরসাইল নিয়ে স্কুলের উদ্দেশে রওনা দেয়। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে পাবনা-ঈশ্বরদী সড়কের বহরপুর এলাকায় পৌঁছালে একটি ইঞ্জিনচালিত করিমনের সঙ্গে তাদের মোটরসাইকেলটির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে তিন বন্ধুই গুরুতর আহত হয়।
স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করলে চিকিৎসকেরা মিতুল হোসেনকে মৃত ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সিয়াম ও বিশালকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর কো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত সোমবার রাত ১২টার দিকে সিয়াম সরদার ও গতকাল বুধবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে বিশাল হোসেন মারা যায়।
দাশুড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বকুল হোসেন সরদার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক ও কষ্টকর। তিন বন্ধু একসঙ্গেই চলত, একসঙ্গেই পড়ত। একে একে তিনজনই চলে গেল। তিনটি ছেলের এমন মৃত্যু মেনে নেওয়ার মতো না। প্রতিটি পরিবারেই মাতম চলছে।
ঈশ্বরদী সরকারি ভোকেশনাল টেক্সটাইল ইনস্টিটিউটের সুপারিনটেনডেন্ট রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘তিনজনই আমাদের ছাত্র। অপ্রাপ্ত বয়সে মোটরসাইকেল দেওয়ায় তাদের এই করুণ পরিণতি হলো। বিষয়টি খুবই কষ্টকর। অভিভাবকদের এ বিষয়ে সতর্ক হওয়া জরুরি বলে মনে করি।’
ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অরবিন্দ সরকার বলেন, ঘটনাটি জানার পর খোঁজখবর নেওয়া হয়েছে। তবে নিহতদের পরিবার থানায় কোনো অভিযোগ করেনি।