চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাটল ট্রেনে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সম্পাদকের অনুসারীরা নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বগিতে চিকা মারার কাজ করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
যদিও বগিভিত্তিক ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের পাশাপাশি বগিতে নামে বেনামে চিকামারা, টি-শার্ট, প্ল্যাকার্ড, স্লোগান বসানো নিষিদ্ধ করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।
এসব কর্মকান্ড থেকে বিরত থাকতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক আহসান হাবিব স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি ও প্রকাশ করা হয়।
এতে বলা হয়, ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের অনুমতিক্রমে এই আদেশ জারি করা হলো। আদেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কিন্তু চবি সভাপতি রেজাউল হক রুবেল ও সাধারণ সম্পাদক ইকবাল টিপুর অনুসারীরা বগি ভিত্তিক গ্রুপ সিএফসি ও সিক্সটি নাইন সহ চবি ছাত্রলীগের নানা গ্রুপ উপ-গ্রুপে ভাগ হয়ে দেয়ালে চিকা, ব্যানার লাগানো ও মহরায় রয়েছে বলে জানা যায়।
এদিকে চবি ছাত্রলীগের সভাপতি ও সেক্রেটারীর বক্তব্যে এই বগি ভিত্তিক গ্রুপের কার্যক্রমের নিষেধাজ্ঞাকে সাধুবাদ জানালেও বাস্তবে উভয় নেতার অনুসারী তা মানছে না। সম্প্রতি দৃশ্যমান হচ্ছে বগি ভিত্তিক সংগঠনের নাম লেখা, চিকার দৃশ্য রয়েছে ক্যাম্পাসে জুড়ে । এই নিয়ে চবি ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মাঝে নানা সমালোচনা ও প্রতিক্রিয়া চলছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও।
চবি ছাত্রলীগের কয়েকজন সাবেক ও বর্তমান নেতাকর্মীরা বলেন, চবিতে বগি ভিত্তিক গ্রুপ কার্যক্রম, চিকা নিষিদ্ধই যদি করতেই হয় তাহলে সয়ং সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে নিজের গ্রুপের মোড়ক থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। পাশাপাশি পূনার্ঙ্গ কমিটি দিয়ে সাংগঠনিক ভাবে ইউনিটকে শক্তিশালী করতে হবে।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালেও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক কমিটির নেতৃবৃন্দ ও চবি ছাত্রলীগের উপর এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল, কিন্তু বাস্তবে এর কোন কিছুই মানছেন না সয়ং সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা।
বর্তমান আংশিক কমিটির সভাপতি সেক্রেটারী সমর্থিত গ্রুপ সিএফসি ও সিক্সটি নাইনের নানা মহরা, চিকা, ব্যানার, ফ্যাকাল্টির দেয়াল জুড়ে, ক্যাফেটেরিয়া , ক্লাসরুম, বারান্দা, হলজুড়ে এমনকি বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতির অংশজুড়েও এসব চিকা শোভা পাচ্ছে। এই নিয়ে অন্যান্য গ্রুপের নেতা কর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, নিজেদেরকে আগে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করতে হবে, সাবর্জনীন হতে হবে। তাহলেই সংস্কার সম্ভব।
অনেকে ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে চবি ছাত্রলীগের শাটল ট্রেনের বগির নানা ঐতিহ্য, ইতিহাস ও সুফল পূনঃআলোচনা করে বলেন, শাটলের ঐতিহ্য বিলুপ্ত করা একটি ভুল সিদ্ধান্ত ।
গত ২২ অক্টোবর মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সিদ্ধান্তের পরপরই বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে ক্যাম্পাসে ভর্তি পরীক্ষা উপলক্ষে মিছিল-মিটিং, মানববন্ধন, চিকা, পোস্টার, ব্যানার সাঁটানো, প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন, লিফলেট বিতরণ নিষিদ্ধ করা হয়। কিন্তু এই নিষেধাজ্ঞা কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল টিপু সাংবাদিকদের বলেন, চিকামারা, টি-শার্ট, প্ল্যাকার্ড কারা বসিয়েছে আমি জানি না। আমার কাছে এ ধরনের কোন তথ্য নেই। বিষয়টির খোঁজ নিচ্ছি।
অপরদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার জানান, মিছিল-মিটিং, মানববন্ধন, চিকা, পোস্টার ও ব্যানার লাগানো সহ বিধি বিষয়ে নোটিশ দেওয়া হয়েছে। তা অমান্য করলে বিশ্ববিদ্যালয় ব্যবস্থা নেবে।