করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক আবিষ্কার না হওয়া পর্যন্ত সাবধানতার বিকল্প নেই

আপডেট : ১৫ এপ্রিল, ২০২০

করোনাভাইরাসের মহামারীতে থমকে গেছে গোটা বিশ্ব। মানুষ বাঁচাতে দেশে দেশে চলছে লকডাউন। এতে জীবন রক্ষা পেলেও থেমে গেছে জীবিকার চাকা। বাংলাদেশের চিত্রও একই রকম। এই পরিস্থিতিতে স্বেচ্ছা গৃহবাস কবে শেষ হবে, সেই প্রতীক্ষায় দেশের মানুষ। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ত্রিশ শতাংশ বা এর বেশি মানুষ নিয়ম না মানলে ১৪০ দিন পর্যন্ত লকডাউন দীর্ঘ হতে পারে।

করোনাভাইরাসের উৎপত্তিস্থল চীনের হুবেই প্রদেশে দুই মাসের বেশি লকডাউন জারি থাকার পর পরিস্থিতির উন্নতি ঘটনায় সম্প্রতি তুলে নেয়া হয়েছে বিধি-নিষেধ। ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে জীবন। ফের সচল হচ্ছে অর্থনীতির চাকা।

বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত প্রথম রোগী শনাক্তের ৩৮তম দিনে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে এক হাজার। প্রতিদিনই বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। ২৬শে মার্চ থেকে সাধারণ ছুটির আবরণে সারাদেশ কার্যত অবরুদ্ধ। এতে থমকে গেছে অর্থনীতি। জীবিকা হারিয়ে কঠিন সংগ্রামে অগনিত মানুষ। ভালো নেই নিম্ন ও মধ্যবিত্তরা। এখন সবারই একটি প্রশ্ন- সবকিছু স্বাভাবিক হবে কবে?

সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান- আইইডিসিআরের উপদেষ্টা ডাক্তার মুশতাক বলছেন, প্রতিষেধক আবিষ্কার না হওয়া পর্যন্ত সাবধানতাই একমাত্র চিকিৎসা। তিনি বলেন, আমাদের সবাইকে সচেতনভাবে চলতে হবে। এছাড়া যারা সেরে উঠছেন তাদেরও কোয়ারেন্টিন মেনে চলতে হবে।যতদিন পর্যন্ত না এ ভাইরাসের কোন ভ্যাকসিন আবিষ্কার না হয়, ততদিন আমাদের সাবধানতা অবলম্বন ছাড়া আর কিছু করার নেই।

অস্ট্রেলিয়াপ্রবাসী জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডক্টর আবুল হাসনাৎ মিল্টনের মতে, বিধি-নিষেধ ত্রিশ শতাংশ মানুষ না মানলে দীর্ঘ হবে লকডাউনের মেয়াদ। তিনি বলেন, আমরা পরিসংখ্যান করে দেখেছি লকডাউন যদি ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ লোক ঠিকমত পালন করে তাহলে ছয় থেকে সাত সপ্তাহ সময় লাগে। আর যদি ৭০ শতাংশ লোক ঠিকমত পালন করে কিন্তু ৩০ শতাংশ লোক বাইরে থাকে তাহলে এর সংক্রমণ এবং লকডাউনের সময় বাড়তেই থাকে।

কিন্তু লকডাউন প্রলম্বিত হলে অর্থনৈতিক চাপ সামলাতে পারবে কি বাংলাদেশ?

বিআইডিএস সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. নাজনীন আহমেদ বলেন, আমরা ইতিমধ্যেই একটি মহামন্দায় প্রবেশ করেছি। বাংলাদেশেও আমরা এর ছোঁয়া দেখতে পারছি। এটি অর্থনীতির জন্য বিশাল একটি চাপ। এজন্য আমাদের এখনই কিছু পরিকল্পনা করতে হবে। দীর্ঘদিন যদি এমন অবস্থা চলতে থাকে, তাহলে কিভাবে আমরা গৃহভিত্তিক উৎপাদন করতে পারবো সে ব্যবস্থা নিতে হবে।

করোনার প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে হলে দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে দ্রুততার সঙ্গে নতুনভাবে সাজানোর পরামর্শ দিয়েছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।