বড়পুকুরিয়া ও গ্যাটকো দুর্নীতির দুই মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জারি করা হাজিরা পরোয়ানা (পিডব্লিউ) প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার বিশেষ ২ নম্বর আদালতের বিচারক শাহ ইমরান এবং ৩ নম্বর আদালতের দিলজার হোসেন এ আদেশ দেন। খালেদা জিয়ার আইনজীবী হান্নান ভূইয়া এ তথ্য জানিয়েছেন।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি উত্তোলন, ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণে ঠিকাদার নিয়োগে অনিয়ম এবং রাষ্ট্রের ১৫৮ কোটি ৭১ লাখ টাকা ক্ষতি ও আত্মসাতের অভিযোগে ২০০৮ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি শাহবাগ থানায় মামলাটি করা হয়। ওই বছর ৫ অক্টোবর ১৬ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
মামলায় খালেদা জিয়া ছাড়া অপর আসামিরা হলেন সাবেক অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমান (মৃত), সাবেক স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী আবদুল মান্নান ভূঁইয়া (মৃত), সাবেক শিল্পমন্ত্রী মতিউর রহমান নিজামী (মৃত), সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী আলী আহসান মো. মুজাহিদ (মৃত), ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, এম কে আনোয়ার (মৃত), এম শামসুল ইসলাম (মৃত), আলতাফ হোসেন চৌধুরী, ব্যারিস্টার আমিনুল হক, এ কে এম মোশাররফ হোসেন, জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব নজরুল ইসলাম, পেট্রোবাংলার সাবেক চেয়ারম্যান এস আর ওসমানী, সাবেক পরিচালক মঈনুল আহসান, বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম ও খনির কাজ পাওয়া কোম্পানির স্থানীয় এজেন্ট হোসাফ গ্রুপের চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন।
অন্যদিকে গ্যাটকোর নথি থেকে জানা যায়, ২০০৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপপরিচালক গোলাম শাহরিয়ার ১৩ জনের বিরুদ্ধে বাদী হয়ে তেজগাঁও থানায় গ্যাটকো দুর্নীতি মামলা দায়ের করেন। পরে ২০০৮ সালের ১৩ মে খালেদা জিয়াসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের (সিএমএম) আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন দুদকের উপপরিচালক মো. জহিরুল হুদা।
মামলার ২৪ আসামির মধ্যে খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো সাবেক অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমান, বিএনপির সাবেক মহাসচিব আবদুল মান্নান ভূঁইয়া ও সাবেক মন্ত্রী মতিউর রহমান নিজামী মারা গেছেন। আসামির সংখ্যা এখন ২০ জন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, আসামিরা দরপত্রের শর্ত ভঙ্গ ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গ্যাটকোর সঙ্গে চুক্তি সইয়ের ফলে সরকারের ১৪ কোটি ৫৬ লাখ ৩৭ হাজার ৬১৬ টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়। এ ছাড়া গ্যাটকোকে ঠিকাদারি কাজ দেওয়ার বিনিময়ে অবৈধভাবে আরাফাত রহমান কোকো ও ইসমাইল হোসেন সায়মন দুই কোটি ১৯ লাখ ৯৯ হাজার ৭৩৬ টাকার আর্থিক সুবিধা নেন বলে অভিযোগপত্রে বলা হয়।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি দুদকের দায়ের করা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক ড. আখতারুজ্জামান। এই মামলায় অন্য আসামি খালেদার বড় ছেলে তারেক রহমানকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পরে খালেদা জিয়া উচ্চ আদালতে জামিন পেলেও আরো মামলায় গ্রেপ্তার থাকায় কারাবন্দি রয়েছেন।